Sunday, October 18, 2015

লাল খট্টরের ভারতীয়ত্বের সংজ্ঞা এবং তার প্রতিবাদ ইত্যাদি

ফেসবুকের একটি বিশিষ্ট মুসলিম বুদ্ধিজীবী পেজের জন্য এই লেখাটা লিখেছিলাম। সম্পাদকমন্ডলী পড়ে বাহবা দিলেন পিঠ চাপড়ালেন কিন্তু পেজে ছাপলেন না। তাই দেরিতে হলেও পড়ে থাকার চেয়ে এটা এখানেই থাকুক এই ভেবে এখানে দিয়ে দিলাম।  আর শেষ কথা, মাঝে মাঝে বড় হতাশ লাগে। পশ্চিমবঙ্গে নামে মুসলমান হলেও একটাও সঠিক ইসলামী ভাবনায় আদর্শে উদ্বুদ্ধ সংগঠন নেই। সব শালা মুসলিমদের ভোট ব্যাঙ্ক হিসাবে দেখে। হয় কম্যুনিস্ট মানে সিপিএম নয়তো টিএমসি আর নয়তো এই এদের মতো নতুন হতে পারে মুকুল রায়ের গোষ্ঠী।

লাল খট্টরের ভারতবর্ষ
===============
সম্প্রতি নাসিরুদ্দিন শাহ বলেছেন বা বলা ভালো আর্তনাদ করেছেন - "এই প্রথম আমাকে মনে করিয়ে দেওয়া হলো আমি মুসলমান" । আর হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী সারা ভারতের মুসলিমদের মনে করিয়ে দিলেন তারা মুসলমান। উনি বলেছেন "মুসলমানদের এদেশে থাকতে দেওয়া হবে, যদি তারা গরুর গোস্ত খাওয়া ছেড়ে দেয়"। উনি জানেন কিনা জানা নেই তবে গোস্ত খাওয়ার সাথে ইসলামের কোনো প্রত্যক্ষ্য যোগাযোগ নেই। লালনের অনুরাগী এবং ধর্মপ্রান বহু মুসলিম আছেন যারা কোনোদিন গোস্ত খাননি। অনেক বয়স্ক মুসলিম আছেন যারা শারীরীক কারনেও গো্স্ত খাননা তাতে তাঁদের ধর্মাচরনে এবং ভারতবাসী হতে কোনোদিন কোনো অসুবিধা হয়নি। কিন্তু একটি দায়িত্বশীল সাংবিধানিক পদে থেকে যখন লাল খট্টর এই ধরনের মন্তব্য করেন তখন তাকে সরাসরি প্ররোচনা বললে কি অন্যায় হবে? প্ররোচনা দু তরফেই। কৈশোর এবং যৌবনের ধর্ম বিদ্রোহ। তাই যখন ঘরের লোক বলে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবি তখন ছেলেমেয়েরা দরকার না থাকলেও দেরী করে ফেরে। সেই গরম রক্তকেই প্ররোচনা মুসলিম ছাত্র-যুব-কিশোর বাহিনীকে যাতে তারা বিদ্রোহ করে আর ছেলেমানুষী বিদ্রোহকে আর একটা সাজানো মুসলিম সন্ত্রাস বলে চালাতে সুবিধা হয়। আর প্ররোচনা হিন্দু ভাইদের। দেশটাতো তোমাদের - হিন্দু্স্থান এখানে মুসলিমরা কেন থাকবে? আর থাকলেও থাকবে দ্বীতিয় শ্রেনীর নাগরিক হিসাবে তোমাদের তলায়। আসলে ধামাচাপা দেওয়া গেল হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সেই সমস্ত মানুষগুলির দুঃখকে যেখানে ঈদ বা দূর্গাপূজার আনন্দ চাপা পড়ে যায় ভর্তুকিহীন গ্যাসের দাম মেটাতে। চাপা পড়ে যায় বেড়ে চলা বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি আর একের পর এক হিংসার কথা যার প্রতিবাদে আজ লেখকরা পথে নামছেন আবার পথে নামতে গিয়ে প্রানও হারাচ্ছেন শহীদ হচ্ছেন। সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার এক মূর্ত প্রতীক হিসাবে যে ভারতবর্ষ সারা পৃথিবীর বুকে এক অসামান্য উদাহরন তাঁর মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে একের পর এক এইরকম কথাবার্তায়।
ভারতবাসী কে? ভারতে বাস করে এদেশের স্বাধীনতার জন্য রক্ত ঝরিয়ে, এদেশের গান, ইতিহাস কবিতাকে সমৃদ্ধ করেও যদি আজ গরু না খাওয়ার শর্ত মেনে এদেশে মুসলমানদের বাস করতে হয়, যদি তাজমহলকে, কুতুব মিনারকে, গ্র্যান্ড ট্র্যাঙ্ক রোডের রচয়িতাদের উত্তরসূরীদের তাদের ভারতীয়ত্ব প্রমান করতে হয় লাল খট্টরের শর্তে তবে বিপদটাকি শুধু মুসলমানদের না ভারতবর্ষের? ভেবে দেখবার সময় এসেছে আর বলবো না বরং এবার পথে নামতে হবে। পথে নামতে হবে মুসলমানদের নয় ভারতকে বাঁচাতে লাল খট্টরদের হাত থেকে।

No comments:

Post a Comment