মার্কেজ বৃত্তে গিনিপিগ জীবন
আচ্ছা বলতো, সেন্টিগ্রেড আর ফারেনহাইটের
মধ্যে কোনটা বেশি sensitive? কেনেডি স্যর প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিলেন ব্যাচের উদ্দেশ্যে। ব্যাচে আছে নাইন টেন
মিলিয়ে জনা দশেক ছেলেমেয়ে যার মধ্যে আছি আমি (নাইন), আর ক্রাইস্ট চার্চ গার্লসের
ক্লাস নাইনের ফার্স্ট গার্ল – অনন্যা।
আমি বললাম ফারেনহাইট – ওটা প্রায় সেন্টিগ্রেডের ডাবল sensitive। একদম ঠিক ধরেছিস- এই ইন্দ্রনীলটা না বেশ ইনটেলিজেন্ট ছেলে – কেনেডি স্যরের স্বতঃস্ফূর্ত
প্রশংসায় সবাই কেমন একটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। যদিও উত্তরটা প্রায় কারো কাছেই বোধগম্য হয়নি তবুও
কেউ আর মুখ ফুটে সে কথা বলতে পারল না। এরপর কথাটা কেমনভাবে যেন হারিয়ে গেল কেননা
এটার থেকে কোনো ছোটো বা বড়ো প্রশ্ন-উত্তর বোধহয় হয় না।
ব্যাচ শেষ হয়ে গেলে অনন্যা আমাকে ধরল। “অ্যাই, ওটা কি বললি
রে?” আমি বললাম “দেখ জল যে তাপমাত্রায় বরফ হয় এবং ফোটে সেই পয়েন্ট
দুটো তো ফিক্সড। এবার সেটা সেন্টিগ্রেড বলছে ০ আর ১০০ আর ফারেনহাইট বলছে ৩২ আর
২১২। মানে ধর একই দৈর্ঘ্যের একটা সরলরেখাকে সেন্টিগ্রেড ভাঙছে ১০০ ভাগে আর
ফারেনহাইট ভাঙছে ১৮০ ভাগে। মানে ধর ১:১.৮ – প্রায় ডবল হলো না?”
সন ১৯৮৫, সেই প্রথম পাখীর নীড়ের মতো চোখ
তুলে তাকিয়েছিল অনন্যা আর স্প্যানিশে প্রকাশিত হয়েছিল “লাভ ইন দা টাইম অফ কলেরা”।
Ø
একটা স্বপ্নের গল্প করা যাক। মার্কেজ এই
স্বপ্নের বিবরণটা দিয়েছেন “Strange Pilgrims” এর ভূমিকায়। (অনুবাদ
আমার)।
আমি দেখলাম আমি আমার নিজের অন্ত্যেষ্টি
ক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করছি, ঘুরে বেড়াচ্ছি বন্ধুদের সাথে। ওরা সব বিষণ্ণ সাজপোশাকে
সজ্জিত কিন্তু সবটা মিলিয়ে কেমন যেন একটা উৎসব উৎসব আমেজ। আমরা সকলেই খুব খুশী
আবার অনেকদিন পর একসাথে হতে পেরে। আমি বিশেষভাবে বোধহয় সবার চেয়ে বেশি খুশি ছিলাম,
কেননা আমার কোনো ধারনাই ছিলনা মৃত্যু এরকম একটা সুযোগ আমাকে দেবে আমার সমস্ত লাতিন
আমেরিকার বন্ধুদের সাথে মিলিত হবার। সেই সব বন্ধুরা যারা আমার সবচেয়ে পুরনো আর
কাছের বন্ধুরা। কত কত দিন ওদের সাথে দেখা হয়নি, কি ভালোই না লাগছে। যাই হোক
অন্ত্যেষ্টি পর্ব ভালোয় ভালোয় মিটে গেল। এবার ফিরে যাবার পালা। একপা দুপা করে
আস্তে আস্তে সবাই যেতে শুরু করল। আমিও যাবার জন্য পা বাড়ালাম। কিন্তু তখনই তন্ময়,
আমার প্রিয়তম বন্ধু এসে এক নিশ্চিত কাঠিন্যের সাথে আমাকে এসে বললো “তুই তো আর ফিরতে পারবি
না। তোর পার্টি এখানেই শেষ। কেবলমাত্র তুইই ফিরতে পারবিনা আর বাকি সবাই ফিরে যাবে।
এটাই নিয়ম”। - ঠিক তখনই, তখনই আমি
অনুভব করলাম মৃত্যু মানে বন্ধুদের সাথে আর দেখা না হওয়া।
আমার মৃত্যু হয়নি। কিন্তু তাও আমি কি
বন্ধুদের সাথে আছি? প্রশ্নবোধক চিহ্নটাই বলে দিচ্ছে আমি নিঃসন্দেহ নই। হয়তো কোনোদিন
ছিলামও না বন্ধুদের সাথে – হয়তো কেউ আমার বন্ধু ছিলই না, কিন্তু তুমি ছিলে। ভাবতে ভালো লাগে আজও আছো।
আমার ইতিহাসতো আমার Fermina Daza – সেই তোমারই গল্প। একটু বড় হয়ে রাই বা অর্ক যদি কখনো জানতে
চায় আমাদের সময়ের গল্প, যদি শুনতে চায় তাহাদের এক হেজে যাওয়া confused.com প্রজন্মের ইতিহাস, কি
বলবো ওদের? মমতা? মোদী, সিপিএম, নকশাল বা আপ –এর গল্প? হাই তুলে ওরা বলবে “এইরে, মালটা আবার শুরু করলো ....”। যদি বলি আমাদের সময় আমরা মার্কেজ নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম
তাহলে ওরা হয়তো বলবে “পিতৃদেব, ইহার ফলে আমাদের
কয়টি কেশ উৎপাটিত হইল?” আমি মনোরন্জ্ঞন ব্যাপারী নই। একজন দলিত সেল্ফ
এডুকেটেড চন্ডাল নই যিনি নিজের জীবনবৃত্তান্তকে উত্তরিত করেন এক বৃহত্তর রাজনৈতিক
চেতনায়। তার জীবনকথা “ইতিবৃত্তে চন্ডাল জীবন” হয়ে ওঠে এক শ্রেনীর মুখপত্র। শ্রেনী, যে শ্রেনী আজও
বঞ্চিত, সমাজিকভাবে, ঐতিহাসিকভাবে শোষিত। কিন্তু শ্রেনী বলেই সে ক্ষমতার দাবীদার।
বীরভোগ্যা বসুন্ধরা। পাশা উল্টে গেলে এই ক্ষমতাই তার দাসত্ব করবে। “ভূখা মানুষ, বই ধর, ওটা হাতিয়ার”। তাই প্রায় লুপ্তপ্রায় বিপ্লবী প্রজাতির ঝোলায় পাওয়া যায় “ইতিবৃত্তে চন্ডাল জীবন”।
গিনিপিগের কোনো শ্রেনী হয়না। গিনিপিগ কখনো দল পাকাতে পারেনা। সে এতটাই সাধারন
বা বলা যায় predictable যে একটি গিনিপিগের উপর
পরীক্ষা করেই সমস্ত প্রজাতির ব্যবহারের দিক নির্দেশ পাওয়া যায়। আমি একজন
গিনিপিগমাত্র। লাতিন আমেরিকাতে তৈরি স্প্যানিস ড্রাগ মার্কেজের প্রভাব তৃতীয়
বিশ্বের কলকাতার যে অসংখ্য গিনিপিগের উপর ফেলা হয়েছিল, তাদের একজন মাত্র। ড্রাগ expire করে গেছে সুতরাং প্রভাব
সম্পর্কিত রিপোর্টটি এখন প্রকাশ করতে আর বাধা নেই। আলোচ্য গিনিপিগকে বাল্যকালে
বিবেকানন্দ এবং সদ্য-কৈশোরে যথাসময়ে সাম্যবাদের টীকা দেওয়া হয়েছিল।
Ø
মার্কেজ নোবেল পেয়েছিলেন। ভাগ্যিস
পেয়েছিলেন! নয়তো কলকাতার উপকণ্ঠে দমদমে বসে আমি তার নাম জানতে পারতাম না। সেটা
১৯৯১ সাল। বইমেলা থেকে ‘সংগ্রহ’ করার তালিকায় যুক্ত হলো গ্যাব্রিয়েল গার্সেয়া
মার্কেজ। কেন কি ব্যাপার জানার দরকার নেই আপাতত কামু, কাফকা, সার্ত্রে আর
মার্কেজের কালেকশন বানিয়ে নিতে হবে। হাতে এলো অনেককটা বই, কিন্তু মন টানল প্রথম “লাভ ইন দা টাইম অফ
কলেরা”।
১৯৮৫র সেন্টিগ্রেড ফারেনহাইটের পেরিয়ে
তখন আমরা অনেকটা বড় হয়ে গিয়েছি। অনন্যা কমার্স নিয়ে গোয়েঙ্কাতে পড়ছে, মাধ্যমিকে
ফাটাফাটি দারুন রেজাল্ট করার পরও! আমার খুব অবাক লেগেছিল – “তুই সাইন্স নিলি না? কি করে পারলি?” ও জবাব দিয়েছিল “কেরিয়ারটা প্ল্যান করতে হয়, আমার CA করার প্ল্যান আছে”। ধাক্কা খাচ্ছিলাম, বুঝতে পারছিলাম বিপ্লবী
রোমান্টিকতার একটা নির্দিষ্ট ফরমাট আছে তার বাইরে সে একেবারেই অচল একটা বোঝা
মাত্র।
সুতরাং পরিকল্পনামাফিক এই অবস্থানের
গিনিপিগটির উপর প্রয়োগ করা হলো “লাভ ইন দা টাইম অফ
কলেরা”। পড়লাম। একদম ছিটকে ছ হয়ে গেলাম। এটা কি? আমি মনে
করতাম প্রেম নিয়ে আমি তুমি ও সে এই থিমে পার-মিউটেশন আর কম্বিনেশনের সমস্ত প্লট
আমি apprehend করতে পারি।
সুতরাং এদিক থেকে প্রেমে নতুন কোন মাত্রা আর যোগ করতে কেউ কোনোদিন পারবেনা অন্তত
আমার কাছে। কিন্তু সে ভাবনা এসে ধাক্কা খেল Florentino
Ariza’র কাছে। বিশ্বাস আর ভালোবাসা নিয়ে অপেক্ষা করা যায় একান্ন বছর নয় মাস আর চার
দিন। সেতো আসবেই। তাকে আসতেই হবে।
তখন জীবনের লক্ষ্য প্রফেশনাল বিপ্লবী
হবার। সেখানে অনন্যা নেই – থাকবে না সেটা ও খুব পরিষ্কার করেই বলে দিয়েছে।
বুঝতে পারছিলাম এই পণ্য, বাজার সংস্কৃতি, বাস্তবতা এইসব ভারী ভারী কথাগুলি এক
অনিবার্যতার জন্ম দিয়েছে। এ যেন আর এক “Chronicle of a death foretold”। আমার জীবন লেখা হয়ে
গেছে “লাভ ইন দা টাইম অফ কলেরা”-তে।
Ø
She did everything in a methodical solemn way, as
if nothing unforeseen had happened to her since her birth. – Sleeping beauty
and the Airpalne - Marquez
সন ১৯৯৫: নিখুঁত পরিকল্পনায় ও পাশ করল CA inter. তারপর বিয়ে
একেবারে নিখুঁতভাবে। বিয়ের কথা বলতে গিয়ে খিলখিল করে হেসে ও বলেছিল এটা জাস্ট একটা চুক্তি – you know; an agreement. আমার আর দিলীপের কিছু মিউচুয়াল হিসাব নিকাশের
সেটেলমেন্ট। তোর পথ আলাদা, তোকে আমি ভালোবাসি, অ্যাডমায়ার করি কিন্তু তোর সাথে তো
আর লাইফের সেটেলমেন্ট করা চলেনা।
এদিকে নয়া অর্থনীতি চলে এসেছে হই হই
করে। বুভুক্ষু সামন্ততান্ত্রিক গিনিপিগগণকে সরকারি উৎসাহে খাওয়ানো চলছে বাজার
অর্থনীতি। মাঝে বুস্টার ডোজ সোভিয়েতের পতন ও পূর্ব ইউরোপের তাসের ঘর ভেঙ্গে পড়া।
দেবদাস হয়ে যাওয়ার অপশন নেই। বাবা
জমিদার না। দু এক বোতল বাংলা জুটতে পারে কিন্তু তার বেশি কিছু আর না। সে সময় বরং
গাঁজা অনেক সস্তায় পুষ্টিকর আমেজ দিয়েছে। কিন্তু গাঁজাতে ঠিক দেবদাসটার ভ্যালু
পাওয়া যায় না আর চন্দ্রমুখীকে পাবার তো দুর দুর তক কোনো সম্ভাবনা নেই। আবার ফিরে
যাই Florentino Ariza’র কাছে।
অনন্যার সাথে আমার বইপত্র দেওয়া নেওয়া
চলত। “লাভ ইন দা টাইম অফ কলেরা”-র এত গল্প করেছি ওর কাছে কত সময় মুখস্থ বলেছি
কিন্তু বইটা ওকে দেওয়া হয়নি। শেষে একদিন বলেছিলাম “যাহ, তোকে বইটা তোর বিয়েতে প্রেজেন্ট করব”। কথা রেখেছিলাম। ২৩শে জানুয়ারি, ১৯৯৫ বধূ-বেশী অনন্যার হাতে আমি তুলে দিয়েছিলাম
আমার গিফট, এক কপি “লাভ ইন দা টাইম অফ
কলেরা”। ভেতরে কি লিখব অনেক ভেবেছিলাম। বিয়ের প্রেজেন্ট সবাই
হাতে নিয়ে দেখবে ফলে প্রায় দা ভিঞ্চি কোডে লিখতে হবে যা লেখার। অনেক ভেবে শেষ
পর্যন্ত লিখলাম –
With Feelings …
Indranil
Ø
Florentino Ariza on the other hand, had not
stopped thinking of her for a single moment since Fermina Daza had rejected him
out of hand after a long and troubled love affair after fifty one years nine
months and four days ago.
আমি কিন্তু অপেক্ষার দিনগুলি গোনবার
জন্য দেওয়ালে দাগ কাটতাম না। এমন কোনো দিনই যেত না যেদিন কোনো না কোনো কথা, ঘটনা,
ভেসে আসা গান বা হঠাৎ মনে পড়া কবিতার লাইন অথবা হয়তো রাস্তার কুকুর কিংবা কারখানার
পিছনের ভ্যাটের গন্ধ আমাকে অনন্যার কথা মনে পড়িয়ে দিত না।
সে সময় আমি পাক্কা নকশাল। কারখানার গেটে
গেটে ঘুরে কাগজ হক করছি আর স্বপ্ন দেখছি শ্রমিক শ্রেণীর স্বাধীন স্বতন্ত্র সংগঠন
গড়ে তোলার। এইসব ছোটো ছোটো লড়াইগুলি ট্রেড ইউনিয়নের নেহাতই ছোট ছোট দাবী দাওয়া
থেকে উত্তরিত হবে এক বৃহৎ পার্টি গঠনের সংগ্রামে ইত্যাদি ইত্যাদি ...
“অতএব খারাইলোটা কি? মার্কেজের ম্যাজিক রিয়েলিজম
আমাদের ঠিক কিভাবে দেখা উচিৎ?” প্রশ্নটা করেই বুঝলাম নিতান্ত নাবালকের মত একটা কথা
বলে ফেলেছি। আশীষদা স্মিতহাস্যে (আদর্শ কমিউনিস্টরা কখনোই লাউড নয় – হাসিতেও একটা পরিমিতি
আবশ্যক) বললেন “ওটা তোমাদের পেটি বুর্জোয়া বিলাস। ব্যক্তি মানুষকে
নিয়ে মাতামাতি আর বিচ্ছিন্নভাবে তাকে শ্রেণী দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে এনে ব্যক্তিগত সুখ
দুঃখ নিয়ে বুর্জোয়া ভাববিলাস। তোমাদের কি ‘বানর থেকে মানুষ’-টা হয়ে গেছে?” (আশীষদা বলতে চাইলেন
আমাদের স্টাডি সার্কেলে এঙ্গেলসের ‘বানর থেকে মানুষের বিবর্তনে শ্রমের ভূমিকা’ বইটি কি আলোচনা
হয়েছে?)
না, মার্কেজ নিয়ে কোনোদিন আমাদের স্টাডি
সার্কেলে আলোচনা হয়নি। আমার অতি প্রিয় বন্ধু তন্ময়কে বললাম আচ্ছা সংগঠনতো করবে না
আমরা বন্ধুরা মিলে বসে একদিন আড্ডা দিলে হয় না মার্কেজ নিয়ে। ও বলল “আমি তো তোর বন্ধু নই!
আমরা কেউ কারো বন্ধু নই এখানে। এখানে আমরা সহযোগী – একসাথে কাজ করছি একটা
লক্ষ্যকে সামনে রেখে” – কমরেড শব্দটা ও ব্যবহার করল না, এড়িয়ে গেল হয়তো গঠনতন্ত্র
অনুযায়ী আমি তখনো সেই স্তরে পৌছাইনি অথবা পেটি বুর্জোয়া ভাববিলাস আমার মনে যে পরিমাণ
দাগ কেটে আছে তাতে ঐ শব্দটা Censored হয়ে গেল। আমার মধ্যে বোধহয় একটা শকের কোনো ছাপ দেখে থাকবে
তন্ময়। সান্ত্বনা দেবার মত করে কিন্তু নীচু আর গম্ভীরভাবে ও বললো “বন্ধুত্বের সম্পর্কের থেকে এ
সম্পর্ক অনেক উন্নততর, আরো matured”। এই নীচু গম্ভীর ভঙ্গির অর্থ হলো ‘অতএব এ ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্ত
চূড়ান্ত এবং গৃহীত। এখনো যদি বুঝতে না পেরে থাকো, সেটাই স্বাভাবিক, তবে বড় হলে
বুঝবে’। এ তন্ময় সংগঠনের তন্ময় সে তন্ময় আলাদা যে আমার
বন্ধু। অনন্যার বিয়ের রাতে “লাভ ইন দা টাইম অফ কলেরা” প্রেজেন্ট করে এসে
বাংলার বোতল নিয়ে বসেছি। আর.এন.গুহ রোডের মস্তানবাহিনীর (মানে লুম্পেন
প্রলেতারিয়েত আর কি) এক স্যাম্পেল গ্লাসে মদ ঢালতে ঢালতে বললো “ছাড়, ভুইলা যা, মদ খা”। আমার বন্ধু তন্ময় তখন বলেছিল, “বৃহস্পতি সবচেয়ে বড় গ্রহ আর তাই তার উপরেই সবচেয়ে বড় বড় ক্ষতগুলো আছে। ভুলিস
না, হৃদয়টাকে বৃহস্পতির মত বড় করে দে”।
Ø
তাহলে প্রেম কি? আমার অস্তিত্ব কি? আর
ম্যাজিক রিয়েলিজম? নাকি সবটাই পেটি বুর্জোয়া ভাববিলাস? অনেক প্রশ্ন উত্তর নেই।
উত্তর নেই সেই আক্ষেপের ““Damn it,” I said to
myself with great scorn. “Why wasn’t I born a Taurus!””!!! এওতো মার্কেজের কথা। পাশের সিটে বসে যে ঘুমন্ত
স্বপ্নসুন্দরীর সাথে মার্কেজ কাটিয়েছেন গত ৭ ঘন্টা তাকে যাত্রা শেষ হওয়ার মুখে
শুধু একটিবার, একটিবারমাত্র ডাকতে চেয়েছিলেন। চেয়েছিলেন এরোপ্লেনের চাকা নিউ
ইয়র্কের মাটি স্পর্শ করার আগে একবার শুধু তাকে জাগিয়ে দিতে। হয়তোবা পাখির নীড়ের
মতো চোখদুটি খুঁজছিলেন, না আর সময় নেই, আট ঘন্টার যাত্রাপথ প্রায় সমাপ্ত... কিন্তু
না পারলেন না, পারলেন না তাকে একটিবারের জন্য জেগে উঠতে বলতে! কিন্তু আশ্চর্য এইযে
এই না পারাকে উনি বলছেন নক্ষত্রের চক্রান্ত! Taurus, অর্থাৎ মেষ রাশির জাতক না
হওয়ার আক্ষেপ ধরা পড়ছে পেয়ারকে দুশমনের কাছে হেরে যাবার কারন হিসাবে! এটা কি?
রিয়েলিটি? ম্যাজিক? না ম্যাজিক রিয়েলিটি? আবার কেউ কেউ বলবে “আরে ছাড়ো তো, মদের খেয়ালে কি বলতে কি বলেছে আবার পরক্ষনেই
উল্টো কথা বলবে”।
রিয়েলিজমের ছবি পাই মার্কেজের কাছেই।
বুঝতে পারি তান্ত্রিক আর জ্যোতিষের কাছে শুধু আমাদের মত আধা সামন্ততান্ত্রিক (নাকি
পুরো) ইত্যাদি সমাজের মানুষরাই দৌড়ায় না। সুদূর অস্ট্রিয়াতেও ভিয়েনাতে এক অভিজাত পরিবার দিন শুরু করে Frau Friedaর স্বপ্নাদেশ দিয়ে।
সেখানকার অভিজাত এগিয়ে থাকা মানুষজনও সারা দিনের কর্তব্য জেনে নেয় Frau Friedaর কাছ থেকে। কোনো এক
কিশোরের চকোলেটের উপর সেন্সর হয়ে চেপে বসে Frau Friedaর স্বপ্ন। মার্কেজ তুলে ধরেন সামাজিক পটভূমিকাকে। পরিষ্কার হয়ে যায় সামাজিক নিরাপত্তা-হীনতা
কিভাবে চেপে বসে ব্যক্তি মানুষের বিশ্বাসের উপর। কিভাবে তা খুলে দেয় অসহনীয়তার
দ্বার যেখান দিয়ে সশব্দে, সগর্বে প্রবেশ করে Frau Frieda আর আনন্দবাজারের জ্যোতিষ কলামের হরেক মাল। Santiago
Nasarরা খুন হয় সাক্ষী থাকেন বিশপ! কোথায় যেন মিশে যায়
কলকাতা আর ভিয়েনার বাস্তবতা। কিন্তু এতো সবটা নয়। আরো কিছু পড়ে থাকে। Frau Friedaকে উন্মোচন করার পর
যখন বেশ আদর্শ বাস্তবতাধর্মী লোকশিক্ষামূলক গল্প প্রায় দাঁড়িয়ে গেছে তখনই একটা
ধাক্কা। নেরুদার সাথে Frau Friedaর আলাপ। তারপর একই
সাথে একই রাতে একই রকম স্বপ্ন দেখে ফেলেন নেরুদা আর Frau Frieda। তবে কি .... ?
এসব প্রশ্ন কখনো সংগঠনের কাছে
গুরুত্বপূর্ণ ছিল না কিন্তু আমার কাছে তো ছিল। সেই শুরু Point of departure এর....
Ø
অনেকদিন অবধি ঠিক বিশ্বাস করতে পারতাম
না পেঙ্গুইনের মার্কেজগুলো অরিজিনাল না – অনুবাদ। পরে গল্পটা
বুঝেছি। Edith Grossman মার্কেজের
সাথে দীর্ঘ সময় একসাথে যাপন করেছেন। মাল খেয়েছেন, বাওয়ালি করেছেন যাতা আরকি।
অনুবাদগুলো মার্কেজের সাথে বসে করা। মার্কেজের নিজের করা বহু অনুবাদ মিশে আছে ঐসব
অনুবাদের মধ্যে। তাই অনেক ইচ্ছা থাকলেও সাহস পাইনা মার্কেজকে অনুবাদ করে বলতে। একসময় সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের উপর খুব রাগ
হয়েছিল ওনার লেখা “কলেরার দিনগুলিতে প্রেম” পড়ে। ভূমিকায় সন্দীপন
লিখেছিলেন যে উনি মার্কেজের থেকে শুধু নামটাই নিয়েছেন উপন্যাসটা উনি তখনো পড়েননি। “লাভ ইন দা টাইম অফ
কলেরা” আমার হৃদয়ের এত কাছে যে “কলেরার দিনগুলিতে প্রেম” পড়ে আমি রীতিমত সন্দীপন
বিরোধী হয়ে গিয়েছিলাম। এই লেখায় বারবার ঘুরে ঘুরে আসছে বা আসবেও মার্কেজের বিভিন্ন
লেখা কিন্তু তা সবই ইংরাজিতে কারন বহু ইচ্ছা থাকলেও অনুবাদটা আমার নির্মাণ করার
ক্ষমতা নেই।
Ø
A novel is something where everything must be
defined in the first paragraph: structure, tone, style, rhythm, length, and
sometimes even the personality of a character. All the rest is the pleasure of
writing, the most intimate, solitary pleasure one can imagine…
হুমম মার্কেজ এটা বললেন। তাহলে একবার
আবার পড়া যাক “লাভ ইন দা টাইম অফ কলেরা”র প্রথম প্যারাটা।
I T W A
S I N E V I T A B L E: the scent of
bitter almond always reminded him the fate of unrequited love. Dr. Juvenal
Urbino noticed it as soon as he entered the still darkened house where he had
hurried on an urgent call to attend a case that for him had lost all urgency
many years before.
অর্থাৎ - ইয়ে তো হোনাহি থা। বার্লিন
ওয়ালের ভেঙ্গে পড়া, চাওসেস্কুর পতন, সোভিয়েতের পতন সবই inevitable.
আদর্শের মা মাসি ইয়ে হয়ে গেল... bitter
almond এর গন্ধটা আশীষদা পেয়েছিল কিনা জানিনা কিন্তু পরে
আমি আবার পেয়েছিলাম তিয়েন আন মেন স্কোয়ারে আর একদম হালে নন্দীগ্রাম আর লালগড়ে।
অর্থাৎ কিনা চাঁদ উঠেছে তারই পরে মানে বাকিটা ঔপন্যাসিকের লেখার আনন্দ। এখানে তিনি
কে? ভগবান? ঈশ্বর? সময় অথবা অনন্যা? আচ্ছা, মহাভারতের প্রথম দুটো লাইনের কথা মনে
আছে?
মহাভারতের কথা অমৃত সমান।
কাশীরাম দাস কহে শুনে পুণ্যবান।।
কাশীরাম দাস কহে শুনে পুণ্যবান।।
শুধু ক্ষমতা, ক্ষমতা দাও। কারন ক্ষমতা
অমৃত। ক্ষমতার গল্প মহাভারত, তাকে পাবার জন্য যুদ্ধ ধর্মযুদ্ধ। সেই ক্ষমতা, যা
বদলে দিতে পারে একটা জাতির রুটিন। টিভিতে মহাভারত চলবার সময় সারা ভারতে নেমে আসত
এক অঘোষিত বনধ্। ক্ষমতার অমৃতে তৃতীয় শ্রেনীর একটি সিরিয়াল অমর হয়ে যায়। ক্ষমতার
অমৃতে তাকে পাওয়া যায়। পৃথিবীর এইসব উঁচু মানুষদের দাবী এসে সবই নিয়ে যায়, নারীকেও
নিয়ে যায়।
যা বেকার হ্যাজ হয়ে যাচ্ছে – লেখাটাকি কিছু বোঝা
যাচ্ছে? পাঠক যদি এরপরও টিকে থাকেন তাহলে বুঝবেন কিন্তু আর একটুক্ষণ, তারপর বলছি
এটা কি বস্তু।
তা সে যা হোক, তাহলে আবার সেই একই
প্রশ্ন – খারাইলোটা কি? উপন্যাসের প্রথম লাইনকে সত্য করে
তোলার মধ্য দিয়ে কি প্রমাণিত হয়? ম্যাজিক? রিয়েলিটি কি ম্যাজিক নাকি পুরোটাই আমার,
পাঠকের এক নিষ্ঠুর স্যাডিস্ট কল্পনা? কতকি হবার ছিল? কমিউনিজমের তাসের ঘর ভেঙ্গে
পড়া, অনন্যার চলে যাওয়া, নন্দীগ্রাম এইসব মিলিয়ে একা আমি বসে বসে আজ এই ২০১৪ তে
লিখে চলেছি এক খোঁয়াড়ি। এসবই কি হবার ছিল? এটা কি আদৌ মার্কেজের স্মৃতিচারণ হচ্ছে?
মার্কেজকে নিয়ে উইকিপিডিয়ায় আর্টিকেলটা বরং অনুবাদ করে দিলে একটা কাজের কাজ হত।
যাকগে আঁতেল কাগজে আবার এইসব আঁতলামি ভালো খাবে এটাওতো inevitable!
শিব ও শক্তির খেলা অনুসারে, সমস্ত ঘটনা,
বস্তু, জীবসকল সবই অদ্বৈত ব্রম্ভের ভেদমাত্র। “একদিকে কালরূপে জীবাণুসকল
সঞ্চয় করা হইতেছে, অপরদিকে চৈতন্যরূপে উহাদিগকে অনাদি নিদ্রা হইতে জাগান হইতেছে।
কালের খেলার সঙ্গে যেমন চৈতন্যের যোগ আছে, তেমনই চৈতন্যের খেলার সঙ্গেও কালের যোগ
আছে। কালের খেলা নিগ্রহ, চৈতন্যের খেলা অনুগ্রহ। চৈতন্যের প্রভাবে অনাদি সুষুপ্তি
হইতে জীব জাগিয়া উঠে সত্য, কিন্তু একসঙ্গে
সব জীব জাগে না, ক্রমশ: জাগে। ইহাই চৈতন্যের উপর কালের প্রভাব।” – তান্ত্রিক সাধনা ও
সিদ্ধান্ত, গোপীনাথ কবিরাজ।
Ø
লেখাটা এরকম কেন? বয়ানের সম্পাদক আমাকে
ইন্দ্রনীলদা বলে ডাকে। আর তার সুযোগ নিয়ে আমি যাতা একটা ছাপিয়ে নেব যে _লের লেখা পৃথিবীর অন্য কোথাও
ছাপা হবে না! মার্কেজকে জয়দীপ দেখতে চেয়েছে পাঠকের চোখ দিয়ে পাঠকের ওপর মার্কেজের
প্রভাব। অর্থাৎ মার্কেজকে যদি একটা ড্রাগ ধরি আর নিজেকে যদি তৃতীয় বিশ্বের এক
আদর্শ গিনিপিগ স্যাম্পেল ধরি তাহলে আমার ওপর মার্কেজের প্রভাব। কিন্তু আমার ওপর তো
শুধু মার্কেজের প্রভাবই কাজ করেনা আরো আরো অনেক অনেক ভাবনাও কাজ করে। এই লেখাটা
লিখতে গিয়ে যে ভাবনা আমাকে ভাবিয়েছে সেটা হলো জ্যাক দেরিদার “This strange
Institution called Literature”. দেরিদা
বুদ্ধি দিচ্ছেন – লিটারেচারের আড়ালে চলে যাও তাহলে অনেক চাপ কম।
লিটারেচার মানে অবাধ লাইসেন্স যা খুশি বলার। রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সমস্ত রকম সেন্সরশিপের
বাইরে বেরিয়ে যাওয়া। অতএব গিনিপিগ নিজেই একটা এক্সপেরিমেন্ট করতে পারে যদি সে
লিটারেচারের আড়ালে চলে যায়। কিন্তু মার্কেজ সংখ্যা – মান না মান ম্যায়
তেরা মেহমান। পাঠক বদ্ধপরিকর সে একটি প্রবন্ধ পড়ছে ... ফালতু বাওয়াল করে লাভ নেই। আর যাই হোক এটা কোনো প্রবন্ধ না।
কিন্তু এধরনের লেখাকে কোন গোত্রভূক্ত
করা চলে? এটাকে কি দর্শন বলা চলতে পারে মানে মার্কেজের দর্শন ও .... ইত্যাদি আর
কি? Philosophy also seemed more political, let’s say,
more capable of posing politically the question of literature with the
political seriousness and consequentiality it requires.
হুমম বোঝা গেল। না পলিতিকাল নেখা নেখার
কোনো ইচ্ছে তো নেইই কিন্তু ভাববার বিষয় এই যে পাঠক আবার এই লেখাটা কোনোরকমে Philosophy গোত্রভুক্ত করে ফেলবে
নাতো? সাধু সাবধান! তাহলে উপায়? উপায় আচে, আচে দেরিদা কইয়া গেছেন....
সমস্ত ড্রাগ মিলিতভাবে গিনিপিগের
প্রতিক্রিয়া ঠিক করে। শেষ বিচারে তাই গিনিপিগের প্রতিক্রিয়া কেবলমাত্র তার নিজের
কথা, আত্মজীবনী। যে অমৃত সেই গিনিপিগের কাছে বিষ হয়ে দেখা দিয়েছিল তাকে সাধারণীকরণ (generalize) করলে
পাঠক নিজ দায়িত্বে করবেন। আমার কোনো দায় নেই। এ-লেখা একেবারেই আত্মজীবণীমুলক আমাকে
আর মার্কেজকে ঘিরে। আমরা যেন দাঁড়িয়ে আছি একই বৃত্তের মধ্যে – কখনো কেন্দ্রে
মার্কেজ আর পরিধিতে আমি বা কখনো উল্টোটা- কেন্দ্রে আমি আর মার্কেজ পরিধিতে।
Ø
সন ২০১৪: আপাতত আমার কথা প্রায় শেষ।
কিন্তু – শেষটা কি? রিয়েলিটি? ম্যাজিক? নাকি ম্যাজিক
রিয়েলিটি? গিনিপিগ এখন বেশ ভালো আছে। তাকে যথাসময়ে যথাবিহিত কমপ্লিমেন্টারি এবং সাপ্লিমেন্টারি
ড্রাগ নিয়মিতভাবে দেওয়ার ফলে সে এখন পরবর্তী পরীক্ষার সাবজেক্ট হিসাবে ভালোই আছে।
অনন্যা আমাকে ছেড়ে যায়নি, প্রকৃতির হাতে
আমি, (যে আমি দলবদ্ধ আমরা গিনিপিগের একটি গিনিপিগ) নিজেকে দিতে পারিনি। আমাদের
বিপ্লবে তখন বা হয়তো এখনো Fermina Daza র কোনো জায়গা নেই। পুরুষ
প্রকৃতিকে ব্যবহার করবে, তার সমস্যা তার সমগ্র পুরুষজাতির সমবন্টনে প্রকৃতির সাথে
প্রেম তার কাছে নিতান্তই একটা হেডেক-মাত্র। অথবা পুরোটাই একটা নিষ্ঠুর inevitable খেলা। গিনিপিগ তার নিজের অবস্থানে থেকে তার কর্তার ইচ্ছাকে
নিশ্চিতভাবে জানতে পারেনা। ১৯৮৫র পর জীবন চলে গেছে কুড়ি কুড়ি বছরের পার... এসময়ে
কি মনে হত?
“লাভ ইন দা টাইম অফ কলেরা”-র শেষ অংশে...
Florentino Ariza, for his part, suddenly asked
himself what he would never dared to ask himself before: what kind of secret
life had she led outside her marriage? Nothing would have surprised him,
because he knew that woman are just like men in their secret adventures: the
same stratagems, the same sudden inspirations, the same betrayal without
remorse.
অনন্যার সাথে অনেকদিন দেখা নেই। বিয়ের
পর ওর প্রথম জন্মদিনে শেষ চিঠিটা দিয়েছিলাম তারপর থেকে ব্ল্যাক আউট। ভাগ্যিস
ব্ল্যাক আউট! নয়তো এই লেখাটা লিখতেই পারতাম না। ফেবু, অরকুট, নোকিয়া এবং আরো
অনেককে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাদের কানেক্ট করে এই গল্পটার পুটকি ইয়ে না করার জন্য।
কেননা এখনো সময় হয় নি –
“লাভ ইন দা টাইম অফ কলেরা”-র একদম শেষ লাইনকটা
এই রকম -
“And how long do you think we can keep up this
goddamn coming and going?” he asked.
Florentina Ariza had kept his answer ready for
fifty-three years, seven months, and eleven days and nights.
“Forever” he said.
যতক্ষন আমি আমার গিনিপিগত্বকে চ্যালেন্জ না করছি, ততক্ষন কোনো আদর্শ বা কোনো
তত্ত্ব বা কোনো ধারনাতে আমার বিশ্বাস বা অবিশ্বাস ঘোষনা করা বা না করা একদমই পালং
শাকের ক্যাশমেমো। সুতরাং আমার কোনো দায় নেই কোথাও শুধুমাত্র উপন্যাসের প্রথম
লাইনের প্রতি ছাড়া।
কুলার্ণবতন্ত্রে, পরম পুরুষ শিব প্রকৃতিকে বলছেন, “হে কুলনায়িকা, শচী-ইন্দ্র, রোহিনী-চন্দ্র, স্বাহা-অগ্নি,
প্রভা-রবি, লক্ষী-নারায়ন, বাণী-ব্রম্ভা, রাত্রি-দিবস, অগ্নি-সোম,
বিন্দু-নাদ, প্রকৃতি-পুরুষ, আধার-আধেয়, ভোগ-মোক্ষ, প্রাণ-অপান, বাক্-অর্থ,
বিধি-নিষেধ, সুখ-দুঃখ ইত্যাদি যে যে যুগ্ম যেমন দৃষ্ট বা শ্রুত হয় সে সবই নিঃশংসয়
তুমি এবং আমি”।
No comments:
Post a Comment