Wednesday, April 29, 2015

দুনিয়ার পাগোল এক হও - পাগলা দাশু পাখা সংঘ

দুনিয়ার পাগোল এক হও - পাগলা দাশু পাখা সংঘ
===============================
সুস্থ লোকদের উৎপাত খুব বেড়ে গেছে। এইসব সুস্থ লোকরা কোনোদিনই পাগোলদের ভালো চোখে দেখেনি। পাগোলরা বরাবরই সংখ্যায় কম আর তাই তারা কোনঠাসা। পাগোলরা সমাজের বা বাড়ির বা অন্য কোনো কিছুর বিষয়েই ভাবিত নয়। বরং তাকে ভাবতে বললে সে রেগে যেতে পারে। সুতরাং পাগোলদের দ্বারা কিছু হবে না। এরা সমাজ, রাজনীতি সব থেকেই দলছুট।
কিন্তু সমাজ জানে পাগোলদের দরকার সমাজের নিজেরই স্বার্থে। যেসব প্রশ্ন সবাই মেনে নেয় কেন ওটা এরকম জিজ্ঞাসা করেনা পাগোল সেখানে তেড়ে যায়। ওর পিছনে পড়ে যায়। যেমন ধরুন নিউটন। আচ্ছা বাপু সবাই দেখে আপেল গাছ থেকে মাটিতে পড়ে। কেন সেটা নিয়ে কেউ প্রশ্ন করে? নিউটন পাগোল তাই পড়ে গেলেন ওই কেনর পিছনে। ফল আজকের দুনিয়া।
নজরুল, নিউটন, দা ভিঞ্চি, চ্যাপলিন, মার্কস, রামকৃষ্ণ, লালন, বিদ্যাসাগর, আইনস্টাইন এবং রবীন্দ্রনাথ, এরা সবাই পাগোল ছিলেন। এমনকি এদের পাগলামির রোগের নামটাও খুজলে পেয়ে যাবেন যেমন ধরুন মার্কসের রোগটার নাম এম.পি.ডি – মালটিপল পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার।
কোনো একটা পাগোল একটা বিরাট যুগান্তকারী কিছু একটা করে ফেললেই, সুস্থ লোকেরা সেটা বেশ বেমালুম ঝেড়ে দেয়, ব্যবসা করে, মাল কামায়। আর মিডিয়া আর সবাই এমন হাবভাব করে যেন এরকম প্রতিভার বিকাশ সম্ভব প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর, আই আই টি, আই এস আই আর হালফিলে আই আই এমে। অর্থাৎ এই সমস্ত জ্ঞানের (ব্র্যাকেটে মোটা মাইনের চাকরির গ্যারান্টি) ফ্যাক্টরিতে কাঁচামাল হিসেবে ফেলতে হবে একটা কাউকে আর ফ্যাক্টরি থেকে ফিনিশ হয়ে বেরোবে রবীন্দ্রনাথ বা আইনস্টাইন।
এটা বলা নিশ্চয়ই বাড়াবাড়ি যে সমস্ত পাগোলই আসলে জিনিয়াস কিন্তু কথাটা হলো সমস্ত পাগোলই জিনিয়াস নয় কিন্তু সমস্ত জিনিয়াসই পাগোল।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যেখানে কোনো কথা বলা মানেই শ্রোতার মনে সর্বক্ষন হিসাব চলে এমালটা আসলে কি? সিপিএম না তৃণমূল না বিজেপি বা কিছু না পাওয়া গেলে নকশাল সেখানে এরকম পাগোলদের মহা যন্ত্রনা। এরা একটা ইস্যুতে পাগোল যেমন কেউবা প্রকৃতি পরিবেশ, কেউ বাংলার সংস্কৃতি বা ভাবধারা কেউবা জাতপাত এবং ছোটোলোকদের সমস্যা। স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক কথাবার্তা তাদের বলতেই হয়, এসে যায়। ফলত লোকে এদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্র্যাকেটে ফেলে বা ফেলার আপ্রান চেষ্টা করে। আর একান্তই না পারলে রেগে যায় আর প্রায়শই আজে বাজে কথা বলে বা গুজব ছড়াবার চেষ্টা করে বা আরো স্পষ্টভাবে বললে নিজের মিথ্যাকে নিজের কাছেই সপ্রমান করে আর লোককেও দলে টানার চেষ্টা করে।
অবশ্য এদের থেকেও করুণ অবস্থায় আছে আর এক জাতের পাগোল। এরা আধ্যাত্মিক পাগোল। এককালে নাস্তিক হওয়া মানে ছিল রেবেল বা বিদ্রোহী আর আজ আস্তিক বা আধ্যাত্মিক হওয়া মানে একেবারে আন্ডারগ্রাউন্ড বিদ্রোহী হওয়া। কখনো কখনো তা এতটাই যে নিজের পরিবারের থেকেও তা লুকাতে হয়।
ইতিহাস হয়তো এদের মধ্যে কাউকে কাউকে স্বীকৃতি দেবে। হয়তো কেউ একটা নোবেল বা বুকার বা নিদেনপক্ষে একটা আনন্দ বা আকাদেমি পাবে আর তারপর তার কাজের মুল্যায়ন হবে, ডকু হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমার ভাবনাটা এইসব পাগোলদের নিয়েই। একটা ই-ম্যাগাজিন বা ওয়েবসাইট। ব্যক্তিগতভাবে জীবনে অনেক কাজই আরম্ভ করেছি কিন্তু শেষ করাতো দুরের কথা কন্টিনিউ পর্যন্ত করতে পারেনি। এবারে তাই এমন কিছু ভাবতে চাই যা কম লোকবল, অর্থবলে সম্ভব এবং যেটা একটা ইস্যু হয়ে বন্ধ হয়ে গেলেও ইতিহাসের সাপেক্ষে কিছু কাজ হবে।
নিজেদের মধ্যে আলাপচারিতায় আমি এবং আমাদের অনেকেই বলে থাকি আমরা এক ভ্যাবাচ্যাকা প্রজন্ম। আমরা টিভির জন্ম দেখেছি, মোবাইলের জন্ম দেখেছি, ইন্টারনেটের জন্ম দেখেছি এবং বিশ্বায়ন পরবর্তী পর্যায়ে পণ্যসংস্কৃতি দেখেছি বা এখনো দেখছি। এর সাথে যোগ করতে হবে নকশাল আন্দোলনের ছাট, সিপিএম এবং কলেজ স্ট্রীট-কফি হাউস বিপ্লব। সবটাই দেখেছি এবং মানিয়ে নিয়েছি বা নেবার চেষ্টা করে চলেছি কিন্তু ভ্যাবাচ্যাকা মেরে কোনো কাজটাই আর করা হয়ে উঠল না। ছেলেমেয়ে বড়ো হচ্ছে। একদিন যদি তারা জিজ্ঞাসা করে বাবা, তোমরা কয়টি কেশ উৎপাটন করিয়াছ? – তখন কি জবাব দেবো?
মারা যেতে দেখেছি একের পর এক দিকপালকে। দেহগুলো মরে যাবার অনেক আগে থেকেই তাঁরা মুছে গিয়েছিলেন সমসাময়িক ইতিহাস থেকে বাকিটা ফর্মালিটি।
হারিয়ে যাওয়ার আগে তাই পাগোলদের পাগলামির স্বীকৃতির ছলে ধরে রাখতে চাই একটুকরো ইতিহাসকে। যদি ওরা প্রশ্ন করে তার উত্তরে নিজেদের সাফাই হিসাবে।
বিভাগ সমূহ
---------------------
১. ফিচার্ড পাগোল আলেখ্য
----------------------------
এখানে থাকতে পারে একজন বা দুজন পাগোলের পাগলামির কথা, ভিডিও এবং লেখাপত্তর ইত্যাদি। একটা ভিডিও থাকবে যেটা সেই পাগোলের সাথে ইন্টারভিউয়ের ভিত্তিতে তৈরি হবে। ইন্টারভিউটা আবার আড্ডার ফর্মাটে।
২. ঐতিহাসিক পাগোল আলেখ্য
----------------------------------------
এখানে থাকবে কোনো একজন জিনিয়াসের পাগলামোর গল্প।
৩. এস-এম-এস কনটেস্ট
----------------------------------------
নিজেকে কেন পাগোল বলে দাবী করেন জানান।
৪. পাগলা দাশু বা ঐরকম কোনো সাহিত্যের চরিত্রের পরিচিতি
৫. ছিট আছে, ভবিষ্যতে বড়ো পাগোল হতে পারে এমন মানুষের পরিচিতি তাকে সামনে নিয়ে আসা।
৬. পাগলামো নাটক বা সিনেমা বা বই এর রিভিউ
কেউ যদি এই পাগলামির সাথে যুক্ত হতে চান তাহলে অবশ্যই যোগাযোগ করুন।

No comments:

Post a Comment